**টাইম ট্রাভেলের অভিযান**
তানিয়া ও সুজন একটি সাধারণ পরিবারের দম্পতি। তাদের দুই মেয়ে—মুক্তি, ১২ বছরের কৌতূহলী মেয়ে, এবং এ্যানি, ৬ বছরের দুষ্টুমিভরা ছোট্ট মেয়ে। তারা বরিশালের একটি গ্রামে থাকে। একদিন, তানিয়ার বাবার পুরানো বাড়ি পরিষ্কার করতে গিয়ে মুক্তি একটি অদ্ভুত যন্ত্র খুঁজে পায়। এটি দেখতে একটি পুরানো ঘড়ির মতো, কিন্তু এর মাঝে অদ্ভুত আলো জ্বলছে।
মুক্তি সেটি সুজনের কাছে নিয়ে আসে। সুজন, যিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার, যন্ত্রটি পরীক্ষা করে দেখেন এবং বুঝতে পারেন এটি একটি টাইম মেশিন! তিনি তানিয়াকে ডেকে বলেন, "এটা দিয়ে আমরা সময়ের মধ্যে ভ্রমণ করতে পারি। চলো, একটা অ্যাডভেঞ্চারে যাই!" তানিয়া প্রথমে ভয় পেলেও মুক্তি ও এ্যানির উৎসাহ দেখে রাজি হয়ে যায়।
তারা সবাই মিলে যন্ত্রটির বোতাম টিপে দেয়। হঠাৎ একটা ঝড়ের মতো আলোর ঝলকানি, আর তারা চোখ খুলে দেখে তারা ১৯৭১ সালে এসে পড়েছে—বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে! চারপাশে গুলির শব্দ, মানুষের দৌড়াদৌড়ি। মুক্তি ভয়ে চিৎকার করে ওঠে, "বাবা, এটা কোথায় এলাম?" সুজন তাড়াতাড়ি বলে, "শান্ত হও, আমরা ইতিহাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছি।"
তারা একটি গ্রামে আশ্রয় নেয়, যেখানে তারা একজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে দেখা করে। সেই যোদ্ধা তাদের গল্প শোনায়, কীভাবে তারা দেশের জন্য লড়াই করছে। এ্যানি, যে সবসময় দুষ্টুমি করে, হঠাৎ বলে ওঠে, "আমরা কি তোমাদের হেল্প করতে পারি?" তানিয়া হেসে বলে, "এ্যানি, আমরা এখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারব না। কিন্তু আমরা এই সময় থেকে শিখতে পারি।"
মুক্তি একটি দলের সঙ্গে গিয়ে গোপনে খাবার সরবরাহে সাহায্য করে। সুজন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তার ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞান ব্যবহার করে একটি অস্ত্র মেরামত করে দেয়। তানিয়া গ্রামের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সাহসের গল্প শোনে। এ্যানি সবার মন ভালো করার জন্য গান গায়।
কিন্তু হঠাৎ শত্রুপক্ষের হামলা শুরু হয়। সুজন তাড়াতাড়ি টাইম মেশিন বের করে বলে, "আমাদের এখনই ফিরতে হবে!" তারা সবাই মিলে যন্ত্রটি চালু করে, আর এক মুহূর্তের মধ্যে তারা আবার তাদের বর্তমান সময়ে ফিরে আসে।
ফিরে এসে মুক্তি বলে, "বাবা, আমরা যে সাহস দেখলাম, সেটা আমি কখনো ভুলব না।" এ্যানি হেসে বলে, "আমি যদি বড় হই, আমিও মুক্তিযোদ্ধা হব!" তানিয়া ও সুজন হাসেন। তারা বুঝতে পারেন, এই টাইম ট্রাভেল তাদের শুধু অ্যাডভেঞ্চারই দেয়নি, বরং ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা ও দেশপ্রেমের শিক্ষাও দিয়েছে।
**শেষ**

Comments
Post a Comment